মতিহার বার্তা ডেস্ক: বগুড়ার স্বনামধন্য বিদ্যাপীঠ বিয়াম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের দুই প্রভাষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। কলেজের সাবেক এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে তার ফেসবুক পেজে অশালীন মন্তব্যের বিষয়টি প্রকাশ পেলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
তারা বলছেন, কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও প্রশ্রয়ে এমন অনৈতিক ঘটনা ঘটে চলেছে।
নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীরা বলছেন, সমাজ ও পরিবারের বাধার মুখে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বিচারের পরিবর্তে সমঝোতা হওয়ায় এমন অপরাধ বাড়ছে। তারা তদন্তসাপেক্ষে অভিযুক্ত দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্ট সবার দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বিয়াম ফাউন্ডেশনের পরিচালক আবদুর রফিক জানান, শিক্ষকদের বিরুদ্ধে এমন বিচ্যুতি কখনও সহ্য করা হবে না। তাদের কাছে কৈফিয়ত চাওয়া হবে। প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি তদন্তসাপেক্ষে এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
অধ্যক্ষ মোহা. মুস্তাফিজুর রহমান জানান, শিগগিরই তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। অভিযোগের সত্যতা পেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, এটা নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। ছাত্রীর পরিবারের সঙ্গে সমঝোতা হয়েছে।
ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আবদুল মোত্তালিব এ প্রসঙ্গে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তিনি বলেন, তার ফেসবুক আইডি বারবার হ্যাকড হচ্ছে।
নির্যাতনের শিকার এক ছাত্রী অভিযোগ করেন, প্রভাষক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ গত ২০ জানুয়ারি তাকে হাত ধরে টানাহেঁচড়া করেন। তাকে নিজের কক্ষে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টাও করেন। এ ব্যাপারে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতি সাবেক জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেও কোনো লাভ হয়নি। এছাড়া অধ্যক্ষের হস্তক্ষেপে তার পরিবার সমঝোতা করতে বাধ্য হয়।
এই প্রভাষকের বিরুদ্ধে এর আগেও এক ছাত্রীকে হয়রানির অভিযোগ উঠেছিল। কিন্তু ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানের সম্মানের অজুহাতে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়।
গত বুধবার ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আবদুল মোত্তালিবের বিরুদ্ধে ফেসবুকে অশালীন মন্তব্য করার অভিযোগ করেন সাবেক এক ছাত্রী। শিক্ষক মোত্তালিব পোস্ট তুলে নিতে ওই ছাত্রীকে ফোনে হুমকি দেন।
প্রতিষ্ঠানের উপাধ্যক্ষ শফিকা আক্তার জানান, এসব ঘটনা অধ্যক্ষসহ অনেকেই জানেন। তাদের অবহেলায় দিন দিন এমন অপরাধ বাড়ছে।
অধ্যক্ষ মোহা. মুস্তাফিজুর রহমান জানান, এসব ঘটনায় তার কোনো মদদ বা প্রশ্রয় নেই। অনেক কষ্টে প্রতিষ্ঠানটি ভালো অবস্থানে এনেছেন। প্রভাষক আবদুল্লাহ আল মাহমুদের বিরুদ্ধে সাবেক এক ছাত্রী লিখিতভাবে প্রতিষ্ঠানের সভাপতি জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দিয়েছিল কিন্তু ছাত্রীর পরিবার সমঝোতা করেছে।
তিনি বলেন, বাংলা ও ইংরেজি বিভাগের দুই প্রভাষকের বিরুদ্ধে অভিযোগের কথা শুনেছেন। শিগগিরই গভর্নিং বডি শক্তিশালী তদন্ত কমিটি গঠন করবে। তদন্তে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা মিললে তাদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মতিহার বার্তা ডট কম: ২৮ আগষ্ট ২০২০
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.